ট্রাম্পের গ্রিনল্যান্ড কেনার পরিকল্পনা রসিকতা নয়, বললেন মার্কো রুবিও
- By Jamini Roy --
- 31 January, 2025
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গ্রিনল্যান্ড কেনার প্রস্তাব নিয়ে বিশ্বজুড়ে ব্যাপক আলোচনা চললেও, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এটিকে কোনো ‘রসিকতা’ হিসেবে দেখছেন না। বরং তিনি মনে করেন, এটি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় স্বার্থের অংশ।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) দ্য মেগিন কেলি শো-তে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রুবিও বলেন, "এটি নিছক জমি কেনার ব্যাপার নয়, বরং আমাদের কৌশলগত স্বার্থের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত। বিষয়টির সমাধান হওয়া জরুরি।"
এছাড়া তিনি ইঙ্গিত দেন, যুক্তরাষ্ট্র শুধু আলোচনার মাধ্যমেই নয়, বরং প্রয়োজনে সামরিক শক্তি প্রয়োগ করেও গ্রিনল্যান্ড অধিগ্রহণের চেষ্টা করতে পারে। যদিও তিনি স্পষ্ট করে বলেননি, কীভাবে এবং কখন এটি বাস্তবায়ন করা হতে পারে।
রুবিওর মতে, আর্কটিক অঞ্চলের গুরুত্ব দিন দিন বাড়ছে। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফলে বরফ গলতে থাকায় এই অঞ্চল নতুন বাণিজ্য রুট ও প্রাকৃতিক সম্পদের সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত করছে। তিনি বলেন, “যদি যুক্তরাষ্ট্র এখন পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে চীন ও রাশিয়া এই অঞ্চলে আধিপত্য বিস্তার করতে পারে।”
এ কারণে ট্রাম্প প্রশাসন চায়, গ্রিনল্যান্ড যুক্তরাষ্ট্রের অধীনে আসুক, যাতে তারা ভবিষ্যতে আর্কটিক অঞ্চলের কৌশলগত নিয়ন্ত্রণ নিতে পারে।
তবে ট্রাম্প প্রশাসনের এই পরিকল্পনার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মুট এগেদে। তিনি বলেন, "গ্রিনল্যান্ড বিক্রির জন্য নয়। আমাদের ভবিষ্যৎ আমাদের জনগণের হাতেই রয়েছে।"
মুট এগেদে দীর্ঘদিন ধরে ডেনমার্ক থেকে স্বাধীনতা পাওয়ার জন্য প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাই তিনি যুক্তরাষ্ট্রের অধীনে যেতে চান না।
এদিকে ডেনিশ সংবাদপত্র বার্লিংস্কে এবং গ্রিনল্যান্ডের সার্মিটসিয়াক দৈনিকের সাম্প্রতিক এক জরিপ অনুযায়ী, গ্রিনল্যান্ডের ৮৫% জনগণ যুক্তরাষ্ট্রের অংশ হতে চান না।
গ্রিনল্যান্ড বর্তমানে ডেনমার্কের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল। ফলে ডেনমার্ক সরকারও ট্রাম্পের এই পরিকল্পনার বিরোধিতা করেছে।
ইউরোপীয় কাউন্সিলের সভাপতি আন্তোনিও কস্তা বলেন, “ডেনমার্কের সার্বভৌমত্ব ইউরোপীয় ইউনিয়নের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এটি কোনোভাবেই প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে না।”
গ্রিনল্যান্ড কেনার বিষয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী, সে সম্পর্কে নির্দিষ্ট কিছু জানানো হয়নি। তবে রুবিওর বক্তব্য থেকে স্পষ্ট যে, ট্রাম্প সরকার এই অঞ্চলের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
তিনি বলেন, “চার বছর পর আমরা দেখব, আর্কটিক অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের উপস্থিতি আরও শক্তিশালী হয়েছে।”